Skip to main content

 

স্পেনের নতুন আইন ও Regulation ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর মন্ত্রীপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে, যা বিদেশি নাগরিকদের নিয়মিতকরণ (বৈধতা) প্রক্রিয়া সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে, এটি বিশেষ করে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। 

নতুন আইনের ইতিবাচক দিকগুলো

**আধুনিকীকরণ ও সহজীকরণ।

**আগের তুলনায় এখন আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুততর করা ।

**আরাইগো (arraigo) অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় তিন বছর থেকে কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে।

**ভিসার মাধ্যমে প্রবেশের সুযোগ আরও সহজ করা হয়েছে।

শ্রম বাজারে চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর স্পেনে ৩ লক্ষ নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে ।  তবে ৩ লক্ষ মানুষ নিয়মিত করার লক্ষ্য থাকলেও, বাস্তবে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। স্পেনের কাজকাম যা স্লো তারা কি পারবে বছরে এত মানুষের কাগজপত্র দিতে ? আগের মতোই, এখনো অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা এবং বিচার প্রশাসনের অকার্যকারিতা বিদ্যমান। এইটা নিয়ে পোষ্ট হবে পরে …। 

 

*নতুন আইনের আশ্রয়প্রার্থীদের সীমাবদ্ধতা**

আবেদন প্রক্রিয়ার বিলম্ব ও জটিলতা:

বর্তমানে প্রায় স্পেনে  ১৯০,০০০ জনের বেশী আশ্রয়প্রার্থী আবেদন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে আটকে আছে। আবেদন গৃহীত হলেও প্রথম সাক্ষাৎকারের জন্য ৯ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, তার পরে কাজের অনুমতি, বছরের পর বছর লেগে যায় সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে।

**নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়া**

নতুন আইনে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা রাখা হয়নি। যারা আবেদনের সময়কালীন কাজ করছিলেন, নতুন আইনের ফলে তাদের আনিয়মিত অবস্থায় পড়তে হতে পারে। নতুন আইনের কারণে নারীরা শ্রম শোষণ, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হবে, শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। নতুন আইনটি দেখে মনে হচ্ছে, আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন করতে নিরুৎসাহিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি স্পেনের আন্তর্জাতিক দায়িত্ব ও মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতির বিপরীতে যায়।

**আন্তর্জাতিক সুরক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা**

আশ্রয়প্রার্থীদের ছয় মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত অবৈধ অবস্থায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়কাল আরাইগো হিসেবেও গণ্য হবে না। অনেককে আবেদন প্রত্যাখ্যানের ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য আইনি সুরক্ষা ছাড়া থাকতে হবে। এমন কিছু চ্যালেঞ্জ এবং দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। এটি হাজার হাজার অভিবাসী ব্যক্তির নিয়মিতকরণের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি, তবে আশ্রয় প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, তাদের আরও বড় ধরনের দুর্দশা এবং বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হবে, কারণ তারা নিজেদের আইনি অধিকার ব্যবহার করতে এবং সমান শর্তে সমাজে জীবন কাটাতে অক্ষম হয়ে পড়বেন। যেসব আবেদনকারী ইতিমধ্যেই কাজ করছেন, তাদেরও অবৈধ অবস্থানে পড়তে হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে আবেদন প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি না হওয়ায়, তারা আইনি সুরক্ষা ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।

 

**সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা সুপারিশ**

ছয়টি প্রধান সংগঠন (যেমন Andalucía Acoge, Cáritas, CEAR) এই আইনকে শুধুমাত্র অল্প সংখ্যক মানুষের উপকারে আসবে বলে মনে করে।  তারা অভিযোগ করেছে যে আইনটি মূলত শ্রম বাজারের চাহিদা পূরণের জন্য তৈরি। সংগঠনগুলো ILP Regularización Ya নামে একটি আইন প্রস্তাব করেছে যা ৭,০০,০০০ জন মানুষের স্বাক্ষর নিয়েছে। তারা চায় সরকার একটি ব্যাপক নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়া গ্রহণ করুক, যা সকল অভিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। আরও অনেক সংস্থা একত্রিত হয়ে সরকারের কাছে শর্তটি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, এই শর্তটি আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য একটি ফাঁদ, কারণ এটি তাদেরকে আশ্রয় আবেদন প্রত্যাহার করতে প্ররোচিত করতে পারে, এবং পরবর্তীতে বৈধতার আবেদনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। এর ফলে, তারা দীর্ঘসময় কাজ হারাবে, তাদের সামাজিক যোগাযোগ নষ্ট হবে এবং তারা অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়বে।

**পরমার্শ**

যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ নতুন বিদেশী আইন বা আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য নিয়মগুলো সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলে একজন অভিজ্ঞ অভিবাসন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করুন। একজন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী আপনার নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বুঝে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আপনাকে সহায়তা করবেন।

Leave a Reply